আমি ৩৮ বিসিএসে আপনাদের সহযোদ্ধা ছিলাম। ৩৭ তম আমার প্রথম বিসিএস ছিল, কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পাওয়াতে এবার আর অংশগ্রহণ করবো না। অনেকে আমার কাছে রিটেন বিষয়ক বিভিন্ন অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছেন।নতুন পরীক্ষার্থীদের পরামর্শ দানের মত কোন যোগ্যতা আমার তৈরি হয়নি, তবে আমি যে কাজগুলো করেছি তা শেয়ার করতে পারি।
১। পরীক্ষায় যে কলম দিয়ে লিখব, তার ১০টা কলম ১ সপ্তাহ আগেই চালু করে রেখেছিলাম।
২। হাত দুটোকে খুব যত্নে ও সাবধানে রাখতাম, কোন ভাবেই যাতে ইনজুরি না হয়। অনেক সময় নখ এর সামান্য কোনা ভাঙলেও অনেক ব্যাথা হয়, যা লিখতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৩।ঘুমের সময়টা আগেই প্রাকটিস করে নিয়েছি। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা, এর মধ্যে বিছানায় শোয়া বা তন্দ্রা যাওয়া আগে থেকেই পরিহার করেছি, যাতে “দেহঘড়ি”র রিদমের কারনে ঐ সময়ে পরীক্ষার মধ্যে ঘুমের অনুভূতি না আসে।
৪।পরীক্ষা শুরুর আগেই যা মনে আসে ১০-১৫ মিনিট লিখে হলে ঢুকেছি হাত চালু করার জন্য। না হলে দেখা যায়, প্রথম ৩০ মিনিট হাতের জড়তা ভাঙতে কেটে যায়, লেখা আগাতে চায় না।
৫।প্রশ্ন হাতে পেয়ে না দেখেই প্রথমে সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য চেয়ে প্রশ্নপাঠ করেছি। পুরোটা প্রশ্ন একবার পড়ে কমন গুলো মার্ক করেছি, আনকমন গুলোর জন্য কি লেখা যায় মনে মনে ভেবে নিয়েছি।
৬। লেখা শুরুর আগে প্রতিটি প্রশ্ন ৩-৪ বার করে পড়ে সঠিক
ভাবে উদ্ধার করতে চেষ্টা করেছি, প্রশ্নে কি চাওয়া হয়েছে। অনেক সময় তাড়াহুড়া করতে গিয়ে আমরা পুরো প্রশ্ন না পড়েই লিখতে শুরু করি, যার ফলে উত্তর “টু দা পয়েন্ট” হয় না।
৭।আনকমন প্রশ্ন লেখার আগে ১-২ মিনিট ভেবে নিয়েছি, পয়েন্ট সাজিয়ে নিয়েছি মনে মনে, কি ভাবে গুছিয়ে লেখা যায়। এরপর লিখা শুরু করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এতে উত্তর অনেক সুন্দর করে লেখা হয়, যার ফলে নম্বর বেশি আসে।আমার বাংলা, ইংরেজি একটা রচনাও কমন আসেনি। আমি রচনা লিখার আগে ১০ মিনিট ধরে ভেবে পয়েন্টগুলো রাফ করে নিয়েছিলাম।
৮। ডাটা-চার্ট নিয়ে চিন্তা করার বেশি প্রয়োজন নেই। যদি মনে করেন, প্রশ্নের উত্তর বেশি ছোট হয়ে যাচ্ছে নম্বর অনুপাতে, তবে তথ্য গ্রাফ- চার্ট আকারে উপস্থাপন না করে লিটারেচার আকারে লিখুন। রচনার ক্ষেত্রে ডাটা- চার্ট এর শব্দ গননা করা হয় না।
৯। সর্বোপরি, বানানের দিকে খুব বেশি নজর দিতে হবে। PSC এর নিয়ম অনুযায়ী ৩ টা ভুল বানানের জন্য ১ নম্বর কাটা হয়। অনেক ভালো পরীক্ষা দিয়েও অনেকের আশানুরূপ ফলাফল হয় না শুধু বানান ভুলের জন্য।
এই কয়েক দিনে পড়তে গিয়ে বাংলা ও ইংরেজি যে বানানটা কঠিন মনে হবে লিখে প্রাকটিস করুন।
সবার জন্য অনেক শুভকামনা। দেখা হবে বিজয়ে, ইনশাআল্লাহ।
উম্মে হাবিবা ফারজানা
প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত,
৩৭ তম বিসিএস।