সাব্বির আহমেদ শান্ত সাহেবের ভাইভা

৩৮ তম বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে পররাষ্ট্র ১২তম সাব্বির আহমেদ শান্ত এর ভাইভা
৩৮ তম ভাইভা দেওয়ার অভিজ্ঞতা এখন পর্যন্ত কোথাও শেয়ার করা হয়নি। প্রথম বিসিএস ও ভাইভা হওয়াতে কিছুটা মানসিক চাপের সম্মুখীন হয়েছিলাম ভাইভা দেওয়ার আগের ২/৩ দিন।
৩৮ তম ভাইভা অভিজ্ঞতা
সাবজেক্টঃ ইইই,বুয়েট
চয়েসঃ পররাষ্ট্র, এডমিন, পুলিশ……
বোর্ডঃ শেখ আলতাফ আলী স্যার , তারিখঃ ০৯/১২/২০১৯
সিরিয়ালঃ ১২/১২
সময়কালঃ ১১/১২ মিনিট
সালাম দিয়ে রুমে প্রবেশের অনুমতি চাইলাম। ঘড়িতে তখন ১২ টা ৫০ প্রায়। অনুমতির পর প্রবেশ করলাম। স্যার বসতে বললেন, আমি ধন্যবাদ দিয়ে বসা অবস্থায়ই স্যার বললেন, সাব্বির আহমেদ?
আমিঃ জি স্যার।
স্যারঃ (নিজেই সার্টিফিকেট দেখতে দেখতে) কোন ভার্সিটির তুমি?
আমিঃ বললাম।
স্যারঃ তুমি সংসদে কোন পদে আছ?
আমিঃ স্যার, টিভি প্রকৌশলী ।
স্যারঃ (এক্সটারনাল ২ জনের দিকে তাকিয়ে) দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছ দেখছি। সংসদীয় কমিটির মিটিং এ ছিলে কখনও ? ওই মিটিং এ কারা থাকে? কী কাজ হয় বলতে পারবে?
আমিঃ স্যার, আমার পদের কারণে আমি ওই মিটিং এ অ্যাটেন্ড করতে পারিনি কখনও। (কিন্তু কমিটির মিটিং এ কারা থাকে এবং কী কাজ হয় বললাম।)
স্যারঃ তোমার পোস্টটা কী বললে যেন ?
আমিঃ আবার পোস্টের নাম বললাম।
স্যারঃ সংসদে কী কী কাজ কর?
আমিঃ স্যার, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন নামে আমাদের একটি সরকারি টিভি চ্যানেল আছে। আমি ব্রডকাস্টিং উইং এর একজন টিভি প্রকৌশলী হিসেবে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন তা সরাসরি সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা, কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করাক্ষণাবেক্ষণ করা, উইং এর নথি সংক্রান্ত দাপ্তরিক কাজ করে থাকি। এছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিভির সাথে যোগাযোগ করে সংসদ টেলিভিশনের সম্প্রচার নির্বিঘ্ন রাখতে সহায়তা করি।
স্যারঃ তোমাদের চ্যানেল বিকাল ৫ টায় শুরু হয় না?
আমিঃ জি স্যার, রাত ৮ টা পর্যন্ত চলে।
স্যারঃ তুমি তাহলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অফিস কর ?
আমিঃ স্যার, প্রতিদিন রাত পর্যন্ত করতে হয় না। আরও ২ জন ইঞ্জিনিয়ার আছেন। রোস্টার ডিউটি আমাদের।
(স্যার এবার এক্সটারনাল-১ কে প্রশ্ন ধরতে বললেন)
এক্স-১ঃ আমাকে সুইচ ও রাউটার সম্পর্কে বুঝিয়ে বল।
আমিঃ বললাম (স্যার সন্তুষ্ট মনে হল)
এক্স-১ঃ সেমিকন্ডাক্টর পড়েছ?
আমিঃজি স্যার।
এক্স-১ঃ এর ব্রেকডাউন সম্পর্কে বল। (স্যার Avalanche Breakdown সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলেন)
আমিঃ বললাম।
এক্স-১ঃ Suppose, you are an ambassador in a foreign embassy. What’ll be your main concern about sending manpower from your country to that foreign country?
আমিঃ বললাম। যখন সৌদি আরবে নারী শ্রমিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করলাম, তখন স্যার মাথা নেড়ে গুড বলল, মনে হয় স্যার এটা শুনতে চেয়েছিল।
এক্স-১ঃ জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে বর্তমান সরকারের চিন্তা-ভাবনা কেমন মনে হয়?
আমিঃ বললাম। (উত্তর নিলেন বলেই মনে হল।)
এক্স-১ঃ গতকাল দেশে একটা ফাংশন হয়েছে, বলতে পারবে কী এটা ?
আমিঃ ( একটু থেমে , চিন্তা করলাম গতকাল বঙ্গবন্ধু বিপিএল এর ইনঅগারাল প্রোগ্রাম ছিল,এছাড়াও মেরিল প্রথম আলো/ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার টাইপ একটা প্রোগ্রাম ছিল।) বঙ্গবন্ধু বিপিএল এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল।
এক্স-১ঃ হেসে বলল , হ্যা ঠিক আছে, এখন বলতো, এই প্রোগ্রামটা কেন ৮ ডিসেম্বর করা হল? এর পিছনে কি কোন কারণ আছে?
আমিঃ (উত্তর জানা ছিল না) সরি স্যার, আমার জানা নেই।
চেয়ারম্যান স্যারঃ ম্যাডাম, আপনি প্রশ্ন করেন।
এক্স-২ঃ (উনি হাসিমুখের মানুষ।) আচ্ছা, তুমি তো ইলেকট্রিক্যাল এ পড়েছ, রোবটিক্স সম্পর্কে ধারণা আছে ,?
আমিঃ জি স্যার।
এক্স-২ঃ রোবটিক্স কী?
আমিঃ বললাম।
এক্স-২ঃ রোবটিক্সের প্রয়োগ সম্পর্কে কিছু বল।
আমিঃ বললাম। রোবট সোফিয়া এর কথাও বললাম।
এক্স-২ঃ So, you are suggesting that if we use robots in our daily life, our life will be easier?
Me: Yes sir.
এক্স-২ঃ What’ll be the prospects of using robots in our country ?
Me: answered. বললাম যে, রোবট ইউজ করলে একদিকে কাজের দক্ষতা ও গতি বৃদ্ধি পাবে, অন্য দিকে বাংলাদেশের মত বিপুল জনগোষ্ঠীর দেশে বেকারত্বের সংখ্যা আরও বাড়বে।
এক্স-২ঃ (উত্তরে সন্তুষ্ট মনে হল)
চেয়ারম্যান স্যারঃ Shabbir, you were a student of BUET. Do you know about the recent mishap happened in your varsity?
Me: Yes sir, Mentioned the case of Abrar Fahad.
Chairman Sir: What do you think about this incident? What is your opinion regarding the administration of BUET? Do you think there should be any change in the administration? tell us being a concerned citizen, not being a buetian.
Me: Answered. স্যারদের এক্সপ্রেশন দেখে তেমন কিছু বুঝলাম না, বাট ৩ জনেই কথা বলার টাইমে আমাকে অবজারভ করছিলেন।
এরপর স্যার আমার হাতে সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজ বুঝিয়ে দিয়ে বললেন, ঠিক আছে সাব্বির। তুমি এখন যেতে পার। আমি স্যারকে ধন্যবাদ দিয়ে উঠে দাড়িয়ে সবাইকে সালাম দিয়ে কয়েক কদম পেছন দিকে হেটে এসে দরজা খুলে বের হয়ে আসলাম।
আমাকে ফরেন রিলেটেড ২/১ টা প্রশ্ন ছাড়া পরের কোন চয়েস থেকেই কোন প্রশ্ন করে নি। নিজ জেলা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এসব নিয়েও কোন প্রশ্ন ছিল না। বেশিরভাগ প্রশ্নেই তারা আমার মতামত যাচাই, আমার কথা বলার ভঙ্গি ও আমাকে অবজারভ করছিলেন। পিএসসি থেকে বের হয়ে গেটে ২/৩ জনকে ভাইবা অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। এরপর অফিসে রওনা করলাম।
আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, ভাইভা জিনিসটা নিজের জ্ঞানের যাচাই নয়, এটি নিজের ব্যাক্তিত্ব যাচাই। চাকরি করে ভাইভার জন্য যেটুকু পড়াশুনা করেছিলাম, তার তেমন কিছুই বোর্ডে কাজে আসেনি।
৩৮ তম বিসিএস
সহকারী সচিব,পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (সুপারিশপ্রাপ্ত)
মেধাক্রমঃ ১২
তথ্য সুত্রঃ https://www.facebook.com/ZakirsBCSspecials/

নিজের সুবিধামত পড়ার জন্য টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × four =