ছোট বেলার ছড়া কবিতার কবি ও ছড়াকারের নাম

বিসিএস সহ সকল চাকরির পরীক্ষায় এখন প্রায়ই ছোট বেলার ছড়া কবিতার কবি ও ছড়াকারের নাম আসতেছে । গুরুত্বদিন । বিসিএস প্রিলিতে যদি প্রাইমারির বই থেকে কোন কবিতার উক্তি আসে তাহলে এগুলোর বাইরে আসবে না । তাই একবার দেখে নিন।

সবার আমি ছাত্র
– সুনির্মল বসু

আকাশ আমায় শিক্ষা দিল
উদার হতে ভাই রে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি
বায়ুর কাছে পাই রে।

মুক্তিসেনা
– সুকুমার বড়ুয়া

ধন্য সবায় ধন্য
অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে
মাতৃভূমির জন্য।

সবুজের অভিযান,
– রবি ঠাকুর

ওরে নবিন ওরে কাচা,
আধা মরাদের ঘা মেরে তুই বাচা।

ছোটন ঘুমায়
– সুফিয়া কামাল

গোল কোরো না গোল কোরো না
ছোটন ঘুমায় খাটে ।

মাঝি
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার যেতে ইচ্ছে করে
নদীটির ওই পারে
যেথায় ধারে ধারে
বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো
বাঁধা সারে সারে।

বৃষ্টির ছড়া
– ফররুখ আহমদ

বিষ্‌টি এল কাশ বনে
জাগল সাড়া ঘাস বনে,
বকের সারি কোথা রে
লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে।

স্বাধীনতার সুখ
– রজনীকান্ত সেন

বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়ায়,
“কুঁড়ো ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়ায়,
আমি থাকি মহাসুখে আট্টলিকা পরে
তুমি কত কষ্ট পাও রোধ, বৃষ্টির, ঝড়ে।”

চল্‌ চল্‌ চল্‌
– কাজী নজরুল ইসলাম

চল্‌ চল্‌ চল্‌
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণীতল
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল্‌রে চল্‌রে চল্‌।

বাংলা ভাষা
– অতুলপ্রসাদ সেন

মোদের গরব, মোদের আশা,
আ মরি বাংলা ভাষা!
তোমার কোলে,
তোমার বোলে,
কতই শান্তি ভালোবাসা!

আদর্শ ছেলে
– কুসুমকুমারী দাশ

আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন
‘মানুষ হইতে হবে’ –এই যার পণ।

আমাদের গ্রাম
– বন্দে আলী মিয়া

আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর,
থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।
পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই,
এক সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।

রাখাল ছেলে
– জসীমউদ্‌দীন

রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! বারেক ফিরে চাও,
বাঁকা গাঁয়ের পথটি বেয়ে কোথায় চলে যাও?

প্রার্থনা
– সুফিয়া কামাল

তুলি দুই হাত করি মোনাজাত
হে রহিম রাহমান
কত সুন্দর করিয়া ধরণী
মোদের করেছ দান,

প্রভাতী
– কাজী নজরুল ইসলাম

ভোর হল দোর খোল
খুকুমণি ওঠ রে,
ঐ ডাকে জুঁই-শাখে
ফুল খুকি ছোট রে।

ছুটি
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মেঘের কোলে রোদ হেসেছে
বাদল গেছে টুটি,
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই,
আজ আমাদের ছুটি।

ছড়া
– আহসান হাবীব

ঝাঊয়ের শাখায় শন শন শন
মাটিতে লাটিম বন বন বন
বাদলার নদী থৈ থৈ থৈ
মাছের বাজার হৈ হৈ হৈ।

কোন দেশে
– সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

কোন দেশেতে তরুলতা
সকল দেশের চাইতে শ্যামল?
কোন দেশেতে চলতে গেলেই
দলতে হয় রে দূর্বা কোমল?

সবার সুখে
– জসীমউদ্‌দীন

সবার সুখে হাসব আমি
কাঁদব সবার দুখে,
নিজের খাবার বিলিয়ে দেব
অনাহারীর মুখে।

কাজের লোক
– নবকৄষ্ণ ভট্টাচার্য

মৌমাছি, মৌমাছি
কোথা যাও নাচি নাচি
দাঁড়াও না একবার ভাই।

আমার পণ
– মদনমোহন তর্কালঙ্কার

সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,
সারা দিন যেন আমি ভালো হয়ে চলি।
আদেশ করেন যাহা মোর গুরুজনে,
আমি যেন সেই কাজ করি ভালো মনে।

পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল;
কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিল।

মামার বাড়ি
– জসীমউদ্‌দীন

আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা
ফুল তুলিতে যাই,
ফুলের মালা গলায় দিয়ে
মামার বাড়ি যাই

বৃষ্টির ছড়া
– ফররুখ আহমদ

বিষ্‌টি এল কাশ বনে
জাগল সাড়া ঘাস বনে,
বকের সারি কোথা রে
লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে।

কানা বগীর ছা
– খান মুহম্মদ মঈনুদ্দিন

ঐ দেখা যায় তাল গাছ
ঐ আমাদের গাঁ,
ঐ খানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা।

হনহন পনপন
– সুকুমার রায়

চলে হনহন
ছোটে পনপন
ঘোরে বনবন
কাজে ঠনঠন
বায়ু শনশন

ট্রেন
– শামসুর রাহমান

ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে
রাত দুপুরে অই।
ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে
ট্রেনের বাড়ি কই?

আমাদের ছোট নদী
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে,
বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে।
পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।

বাংলা ভাষা
– জসিমউদ্‌দীন

আমার এমন মধুর বাংলা ভাষা
ভায়ের বোনের আদর মাখা।
মায়ের বুকের ভালবাসা।

সংকল্প
– কাজী নজরুল ইসলাম

থাকব না ক বাদ্ধ ঘরে
দেখব এবার জগৎটাকে
কেমন করে ঘুরছে মানুষ
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে।

পারিব না
– কালীপ্রসন্ন ঘোষ

পারিব না এ কথাটি বলিও না আর
কেন পারিবে না তাহা ভাব একবার,
পাঁচ জনে পারে যাহা,
তুমিও পারিবে তাহা,
পার কি না পার কর যতন আবার
এক বারে না পারিলে দেখ শত বার।

আষাঢ়
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে।
ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।

শিক্ষাগুরুর মর্যাদা
– কাজী কাদের নেওয়াজ

বাদমাহ আলমগীর-
কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলবী দিল্লীর্
‌একদা প্রভাতে গিয়া

চাষী
– রাজিয়া খাতুন চৌধুরাণী

সব সধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা,
দেশ মাতারই মুক্তিকামী, দেশের সে যে আশা।
দধীচি কি তাহার চেয়ে সাধক ছিল বড়?

হেমন্ত
– সুফিয়া কামাল

সবুজ পাতার খামের ভেতর
হলুদ গাঁদা চিঠি লিখে
কোন পাথারের ওপার থেকে
আনল ডেকে হেমন্তকে?

আষাঢ়
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে।
ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।

স্বদেশ
– আহসান হাবীব

এই যে নদী
নদীর জোয়ার
নৌকা সারে সারে,
একলা বসে আপন মনে
বসে নদীর ধারে
এই ছবিটি চেনা।

মুক্তির ছড়া
– সানাউল হক

তোমার বাংলা আমার বাংলা
সোনার বাংলাদেশ-
সবুজ সোনালি ফিরোজা রুপালি
রূপের নেই তো শেষ।

বীরপুরুষ
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মনে করো, যেন বিদেশ ঘুরে
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে।
তুমি যাচ্ছ পাল্‌কিতে, মা চ’ড়ে
দরজা দুটো এক্তুকু ফাঁক ক’রে,
আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার প’রে
টগ্‌বগিয়ে তোমার পাশে পাশে।

মা
– কাজী নজরুল ইসলাম

যেখানেতে দেখি যাহা
মা-এর মতন আহা
একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই,
মায়ের মতন এত
আদর সোহাগ সে তো

কাজ্‌লা-দিদি
– যতীন্দ্রমোহন বাগচী

বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই-
মাগো, আমার শোলোক বলা কাজ্‌লা-দিদি কই?

জন্মেছি এই দেশে
– সুফিয়া কামাল

অনেক কথার গুঞ্জন শুনি
অনেক গানের সুর
সবচেয়ে ভালো লাগে যে আমার
‘মাগো’ ডাক সুমুধুর।

পরিচয়
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

একদিন দেখিলাম উলঙ্গ সে ছেলে
ধূলি-পৈরে বসে আছে পা দুখানি মেলে।
ঘাটে বসি মাটি ঢেলা লইয়া কুড়ায়ে
দিদি মাজিতেছে ঘটি ঘুরায়ে ঘুরায়ে।

পাল্কীর গান
– সতেন্দ্রনাথ দত্ত

পাল্কী চলে!
পাল্কী চলে!
গগন-তলে
আগুন জ্বলে!

ওদের জন্য মমতা
– কাজী নজরুল ইসলাম

এই যে মায়ের অনাদরে ক্লিষ্ট শিশুগুলি,
পরনে নেই ছেঁড়া কানি, সারা গায়ে ধূলি।
সারাদিনের অনাহারে শুষ্ক বদনখানি
ক্ষিধের জ্বালায় ক্ষুণ্ণ, তাতে জ্বরের ধুকধুকানি।

বাংলা ভাষা
– জসিমউদ্‌দীন

আমার এমন মধুর বাংলা ভাষা
ভায়ের বোনের আদর মাখা।
মায়ের বুকের ভালবাসা।

নিমন্ত্রণ
– জসীমউদ্‌দীন

তুমি যাবে ভাই- যাবে মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়া লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়;
মায়া মমতার জরাজরি করি
মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি

প্রিয় স্বাধীনতা
– শামসুর রাহমান

মেঘনা নদী দেব পাড়ি
কল-আলা এক নায়ে।
আবার আমি যাব আমার
পাহাড়তলী গাঁয়ে

কে?
– ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত

বল দেখি এ জগতে ধার্মিক কে হয়,
সব জীবে দয়া যার, ধার্মিক সে হয়।
বল দেখি এ জগতে সুখী বলি কারে,
সতত আরোগী যেই, সুখী বলি তারে।

তুলনা
– শেখ ফজলল করীম

সাত শত ক্রোশ করিয়া ভ্রমণ জ্ঞানীর অন্বেষণে,
সহসা একদা পেল সে প্রবীণ কোনো এক মহাজনে।
শুধাল, “হে জ্ঞানী । আকাশের চেয়ে উচ্চতা বেশি কার?
জ্ঞানী বলে “বাছা, সত্যের চেয়ে উঁচু নাহি কিছু আর।”

সুখ
– কামিনী রায়

পরের কারনে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,

আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা,
প্রতকে মোরা পরের তরে।

ঠিকানা
– আতোয়ার রহমান

বাংলাদেশে বাড়ি আমার
বাংলাদেশে বাড়ি,
তারই মধ্যে বসে আমি
মায়ের আদর কাড়ি।

মৈত্রী
– আবদুল কাদির

সবারে বাসিব ভালো, করিব না আত্মপর ভেদ
সংসারে গড়িব এক নূতন সমাজ
মানুষের সাথে কভু মানুষের রবে না বিচ্ছেদ-
সর্বত্র মৈত্রীর ভাব করিবে বিরাজ।

নোলক
– আল মাহমুদ

আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে
হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি সারা বাংলাদেশে।

মানুষ জাতি
– সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে
সে জাতির নাম মানুষ জাতি;
এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত
একই রবি শশী মোদের সাথী।

জীবনের হিসাব
– সুকুমার রায়

বিদ্যাবোঝাই বাবুমশায় চড়ি শখের বোটে
মাঝিরে কন, “বলতে পারিস সূর্য্যি কেন ওঠে?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?

নিজের সুবিধামত পড়ার জন্য টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখুন