মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও তারিখঃ
★১ মার্চ – ইয়াহিয়া খান গণপরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন।
★ ২ মার্চ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে তৎকালীন ছাত্রনেতা “আ স ম আব্দুর রব” প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়।
★ ৩ মার্চ- পল্টনে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ও উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ। যেখানে সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি; গানটিকে জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে “জাতির জনক ” ঘোষণা করা হয়।
★ ৭ মার্চ- ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। ১৮ মিনিট স্থায়ী এই ভাষণে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের(বর্তমানে বাংলাদেশ) বাঙালিদেরকেস্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। (১৩টি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়৷ নিউজউইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।)
★ ১৯ মার্চ- গাজীপুরে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠিত হয়।(এটি মুক্তিযুদ্ধের ১ম প্রতিরোধ)।
★ ২৩ মার্চ- পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসের পরিবর্তে বাংলাদেশ দিবস পালন এবং বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলণ।
★ ২৫ মার্চ- ইয়াহিয়া খানের ঢাকা ত্যাগ। বাঙালি জাতি নিধনে পাকিস্তান “অপারেশন সার্চ লাইট” চালায়। ঐ রাতের শেষ প্রহরে (২৬মার্চ) বঙ্গবন্ধু ওয়ারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
★ ২৬ মার্চ- ১ম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা। আওয়ামীলীগ চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা এম এ হান্নান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ।
★ ২৭ মার্চ- মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কালুরঘাট বেতার থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন।
★ ৩০ মার্চ- পাকবাহিনীরা বোমা মেরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রটি উড়িয়ে দেয়।
★ ৩ এপ্রিল- ত্রিপুরার আগারতলা থেকে স্বাধীনবাংলা বেতারের যাত্রা শুরু।
★ ৬ এপ্রিল- প্রথম কূটনৈতিক হিসেবে আমজাদুল হক ও শাহাবুদ্দিনের আনুগত্য।
★ ১০ এপ্রিল- বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে ৬ সদস্য নিয়ে মুজিবনগর সরকার গঠন।
★ ১১ এপ্রিল- দেশকে ১১টি সেক্টর, ৬৪টি সাব-সেক্টর, ৩টি ব্রিগেড ফোর্স গঠন।
★ ১৭ এপ্রিল- মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে প্রবাসী সরকার শপথ নেন। পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমমিশনার এম হোসেন আলীর আনুগত্য। আতাউল গণি ওসমাণী মুক্তিবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত।
★ ৮ মে- কলকাতার ৮নং থিয়েটার রোডে প্রবাসী সরকারের কার্যক্রম শুরু।
★ ১১ জুলাই- মুক্তিবাহিনী গঠন। সেক্টর কমান্ডারদের বৈঠক ও মুজিববাহিনী গঠন।
★ ১ আগস্ট- যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে “কনসার্ট ফর বাংলাদেশ” অনুষ্ঠিত। বিশ্বখ্যাত ব্যান্ড ‘দ্য বিটলস’ এর শিল্পী জর্জ হ্যারিসন তিনি পন্ডিত রবি শংকরের অনুরোধে ১৯৭১ সালে ম্যাডিসন স্কয়ারে এই আয়োজন করেন। অনুষ্ঠান হতে প্রাপ্ত ২ লক্ষ ৫০ হাজার ডলার সহায়তা করা হয়।
★ ২০ আগস্ট- পাকিস্তান থেকে টি-৩৩ বিমান ছিনতাই করে নিয়ে আসার সময় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান নিহত হন।
★ ৫ সেপ্টেম্বর- ৮নং সেক্টরে যুদ্ধরত অবস্থায় “ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেষ শহিদ হন।
★ ২৮ সেপ্টেম্বর- নাগাল্যাণ্ডে বাংলাদেশের বিমানবাহিনী গঠন করা হয়।
★ ৯ নভেম্বর- প্রথম নৌবহর হিসেবে বঙ্গবন্ধু নৌবহরের যাত্রা শুরু।
★ ২১ নভেম্বর- মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর নিয়ে “যৌথবাহিনী” গঠন ও সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু।
★ ৩ ডিসেম্বর- পাক বিমান হামলার ফলে ভারত বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ শুরু করে।
★ ৬ ডিসেম্বর- ১ম দেশ হিসেবে ভূটান ও ২য় দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। প্রথম জেলা হিসেবে যশোর শত্রুমুক্ত হয়।
★ ৪-১৫ ডিসেম্বর- বাংলাদেশ বিষয়ে জাতিসংঘে বিতর্ক অনুষ্ঠিত।
★ ১০- ১৪ ডিসেম্বর – এদেশের পাকিস্তানি দোসরদের সাথে নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।
★ ১৪ ডিসেম্বর- ড. মালিক মন্ত্রীসভার পদত্যাগ। ৭ নং সেক্টরে যুদ্ধরত অবস্থায় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর শহিদ হন।
★ ১৬ ডিসেম্বর – বিকাল ৪:৩০ মি: নিয়াজীর নেতৃত্বে ৯৩ হাজার পাকবাহিনী জগজিৎ সিং অরোরার নিকট রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমার্পন। ২৬৬ দিনের যুদ্ধের অবসান।
★ ২২ ডিসেম্বর- প্রবাসী সররকার কলকাতা থেকে ঢাকায় আসে।